১
সেনাছাউনি, বনের ভেতর। গোপন ও নির্জন
দু’একটি পাতা ঝরছে বুলেট শব্দে
রয়েছে কোথাও দূরে শত্রু শিবির। কালো পোশাক পরা
পাখিগুলো উড়ে আসছে সেদিক থেকে কী!
পতঙ্গরা একটানা শব্দ তুলছে গাছের ডালে ডালে
কখনো হঠাৎ ভুলে চমকে উঠতে হয়; যেন তীব্র জেটপ্লেন
ছাউনির নিচে বসে এইসব দেখে শুনে সারাদিন
তৈরি হচ্ছি
ভাগ হয়ে যাওয়া ভাষা জোড়া দিতে
যুদ্ধ করবো আবার
২
গাছ ও পাতার রং মিলেমিশে ধুসর-সবুজ
আমার উর্দি, এই যুদ্ধের পটভূমিকা এক রেইন-ফরেস্ট
বাইরে সড়ক ধরে সাঁজোয়া যানগুলো আসছে; যাচ্ছে
সারি সারি পিঁপড়েরা গাছ বেয়ে উঠে যাচ্ছে
ভয়ংকর কমান্ডো
জঙ্গল ছিন্নভিন্ন করে খুঁজছে কাউকে!
ওদের চোখে এক কবিতার চিত্রকল্প-
ভোজসভার টেবিল। গুলিবিদ্ধ চে গুয়েভারা। আমি।
আমাকে ঘিরে চলছে রাত্রির ভোজ উৎসব
৩
চিতাবাঘ! গাছে উঠে বসে আছে। গাছ ওর
ওয়াচ টাওয়ার
চোখে বাইনোকুলার। দেখে-
দূরে লোকালয়। গৃহস্থ দাওয়ায় মাদুর পেতে বসে খাবার খাচ্ছে
গৃহিণী তালপাতার পাখায় বাতাস দিচ্ছে
ধোয়া ওঠা গরম ভাতে
তার পাখার বাতাসে কাঁপছে দুপুরের বন
৪
আড়াআড়ি বিকেলের রোদ এসে পড়েছে
বনের ভেতরে
বাতাসে কাঁপছে বন। বনভূমি জুড়ে গাছের ছায়া
তখন একে অন্যকে
কাটাকুটি করছে ভীষণ। এ এক মল্লযুদ্ধের কল্পদৃশ্য প্রায়
পাখি যাচ্ছে উড়ে। বনের মাটিতে তার সচল ছায়াকে মনে হয়-
রাইফেল থেকে ছুটে বেরিয়ে যাচ্ছে বুলেট
৫
শুকনো পাতার শব্দ। পা ফেলে কেউ আসছে এদিকে
শব্দের দিকে কান খাড়া করে নিজেকে মনে হল-
আমি এক খরগোশ
তীব্র কণ্ঠে ডেকে উঠলো পাখিরা। চেঁচিয়ে উঠলো গাছে সমস্ত বাঁদর।
তারপর বন জুড়ে স্তব্ধতা
এদিকে আসছে কেউ! খরগোশের কান খাড়া
সে কেবল গুনেই যাচ্ছে, নিঃস্তব্ধতার অনেক বছর
চিত্রঋণ- শোভিত রায়
অপার মুগ্ধতা
ReplyDeleteঅসাধারণ
ReplyDeleteমুগ্ধ♡♡
ReplyDeleteঅসাধার! দারুণ! মুগ্ধতা !
ReplyDeleteবরাবরের মতো দুর্দান্ত ।
ReplyDeleteচমৎকার
ReplyDeleteচমৎকার লেখা! ৩য়টি সর্বোচ্চ শিখর ছুঁয়েছে
ReplyDeleteখুব সুন্দর।
ReplyDeleteএইসময়ে কবিকে একটু উচ্চকিত হতেই হবে । সময়ের দাবি পূরণ করার ইতিহাস কবিতার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । আপনার মত বলিষ্ঠ কবির কাছে সময় এই সচেতনতা দাবি করে এবং বিপন্ন মানুষের কাছে পৌঁছাতে আপনার সময় লাগবে না ।
ReplyDeleteঅনন্য কাব্যময়তা
ReplyDeleteশব্দের পায়ে পায়ে কবিতা
ReplyDeleteবাতাসে বারুদ আহত শব্দ
তবু খুঁজে পাই কবিকে
৩য় ও ৫ম সারিতে চেনা অবয়ব
যেখানে সরল বিস্ময় অপেক্ষায়
১থেকে৫ - এক অদ্ভুত মায়ার মোহনজালে টেনে নিয়ে গেলো বরাবরের মতো । জুড়ে দিলে এক বৃহৎ, অ-শেষ সময়ের দলিল। কবি যেনো সেই দস্তাবেজ বনের এক দীর্ঘ গাছের কোটরে রেখে দিয়ে ছায়াবিশ্বে মিলিয়ে আছেন। উদ্দেশ্য- লুকিয়ে দেখা ,কখোন চোরা শিকারী এসে বুড়োগাছের বয়সের দাগ থেকে আগামীর জন্য ছড়িয়ে দেবে সেইসব টুকরো শব্দদাগ ।
ReplyDeleteসবকটা লেখাই ভালো লাগলো। সময়োপযোগী। ৩,৪,৫ বেশি প্রাণবন্ত লাগলো,স্তব্ধতার ভিতরেও। আর ৩ নম্বর কবিতায় নেকড়ে বা অন্য কোনও বাঘের বদলে চিতাবাঘ এর আগমন লেখাটাকে আরও বেশি ডাইমেনশনাল করে তুলেছে।
ReplyDeleteপাঁচ নং কবিতা ভালো লাগল খুব
ReplyDelete