বাক্‌ ১৪০ ।। পতঙ্গরেখা ।। প্রলয় মুখার্জী






সকল প্রাণী পাকস্থলীর ভিতর নিজেরই মাংস ভক্ষণের কৌশল গোপন রাখে।

শীর্ণ হিরামন, লুপ্তপ্রায় ভোঁদর, মসলিন যুবতী, তরুণ কীট স্ব-জাতির মাংসই ভক্ষণ করে।

জীবিত অবস্থায় খাদ্যের অভাবে ঘাসের অভাবে উপবাসে শরীরে জমানো মাংস ও চর্বি তুমি না চাইলেও তিলে তিলে গলে।

গলে খাদ্যে ও চুম্বনে সংশ্লেষ হয়।

একুশদিন বাইরের অন্ন ছাড়া, উড়ন্ত মোরগ ছাড়া মানুষ নিজের মাংস খেয়েই বাঁচতে পারে

এই কৌশলে পতঙ্গ আজীবন পতঙ্গের মাংস খায় আর মানুষ মানুষের।

সঙ্গমের উদ্দেশ্যে এই রীতি রেওয়াজ আদি কাল থেকে

ভালবাসায় পূর্ণ

জলাশয়ে পূর্ণ মাছ।
 




এই রূপ পাখির এই আকাশও
তবু বিষন্ন বাদলপোকা আকাশেই ওড়ে
তাদের যৌন মিলন হয় মুক্ত আকাশে

মিলনের সময় অনেক পাখি আসে,
বাদল পোকা খায় আর গান গায়

বলো ছোটো ছোটো পতঙ্গ মরে, তবেই না বড় বড় পাখির জন্ম হয়।

তবু পাখিও  বন্ধ পালক আর মাংসের জেলে

উৎসব এলেই টের পাই কেউ পালকের দুল পরে হেঁটেছিল ওই পথ

বলো, ছোটো ছোটো পতঙ্গ মরে কতই না পুরুষের জন্ম হয়।





তুমি ভুমিষ্ঠ হওয়ার আগে ছোটো কিন্তু
দীর্ঘ জীবন কাটাও

গর্ভের জলে কাটাও, দিন রাত কাটাও

জন্মের পর বলো কিছুই মনে নেই?

কেবল দুঃখ এলেই কেন সব প্রাণী

কেবল প্রেম এলেই কেন জলাশয়ের কাছে এসে বসো

আর পাথর ছুঁড়ে দেখো জল কাঁপছে।






মাকড়সা জাল পেতে ধরে তার ক্ষিদে
ক্ষিদেগুলি
  বিদ্যুৎ রেখার মত,
আকাশে বর্ণাতীত ছোটো ছোটো মাংসল রেখা জন্মেই ফের মিলিয়ে যায়

মাকড়সা প্রতীক্ষা করে। নড়ে না।
জলপান করে না। পেটে তার ডিম

ওর জালে কোন স্বচ্ছ ডানার পতঙ্গ এসে জড়াবে?
ও ফড়িং তুমি যৌনসাথীর অন্বেষনে এসেই
 তবে জড়ালে?

তার জাল এখন ছোটো ছোটো ফড়িং আর প্রজাপতিতে পূর্ণ

ছোটো ছোটো জীবন একে অপরকে খেয়ে জীবনকেই তো মহৎ করে।


                                        চিত্রঋণ- শোভিত রায়

1 comment:

  1. কবিতা পড়িনি আগে। এই পড়লাম। কিছুই বলার নেই। আড্ডা মারতে চাই একদিন বা মাঝেসাঝে।

    ReplyDelete