১
যেকোন
স্টেশনের নাম সফরদরজং হতে পারে
সেখানে
নামার পর বেদিঘেরা গাছের দেওয়ালে
রহস্যনামা
লেখা বাদামি চিঠি
কতকাল
ছেড়ে যাওয়া প্রেমিকের গান ভেসে ভেসে
লুফেছে
পোড়ামন পোড়াবুক দিকপোড়া দৃষ্টির ঘর
ওখানে
নামার পর শীতকাল পাবে
খড়িওঠা
চামড়ার উল উখোসুখো চুলের মতন
শীতঘুম
গর্তে তুলে রেখে চুকিতকিত খেলবে রোদ্দুর
২
ওই
মেয়ে বিষাদগানে এঁকেছে কান্না
কাচভাঙা
ব্যথার রঙিনে চেপে বসে হৃদয়তিমি
উছলায়
কেঁপে কেঁপে পাখনার আউশ দেখায়
ঝুম
মারা ভোরে মদের ঠেকে নিভন্ত আগুন
হাড়গোড়
ঢেলে পড়ে থাকে মাতাল কঙ্কাল
আর
সব সোয়েটার ওমের দখলদারি ছেড়ে
বেশ
কিছু ঘুমের আরাম চুরি করে
৩
তোমার
চোখ জেগেছিলো সারারাত
পাতায়
ধনুকের ট্যাটু তির ছোঁড়া ত্রিকোণ শলাকা
ঘর
নিমেষ জঙ্গল হলো ছুটে এলো হরিণবলয়
খুরের
শব্দ ছিঁড়ে নদীজল ছলাৎ ঘুঙুর
তোমার
চোখের সঙ্গে জাগতে গিয়ে জঙ্গল
আমার
ভেতর জেগে উঠে নিজেকে ছড়ালো দৃশ্যভর
৪
মাটির
খুব নিচে ভূমন্ডলের ঘড়ি বসে আছে
শরীরের
মধ্যভাগে দু’- দু’টো কম্পাস
টেলিস্কোপ
বসিয়ে কেবল দু’খানা নির্দেশক
কাঁটার
তীক্ষ্ণতা ছাড়া কিছুই পাইনি
এছাড়া
মেইল মেইল জুড়ে ধূ ধূ ফসলের চাঙ
চড়ুইয়ের
পিঠরঙা ল্যাপটানো ঘুমগ্রাম
কেবল
ঘড়িটি সজাগ চোখ টেনে রাখে
সমস্ত
জাগা গানে হাত বুলিয়ে চলে
৫
রাতজামাকে
কাচতে দিলে ঘুমের কলার সরে যায়
সরতে
সরতে চোখের মণির দ্রাঘিমা পেরোয়
অনেকক্ষণ
দৃষ্টির ফাৎনা মেলে বসে থাকা
বুড়ো
শকুন পায়রা উরে যেতে নির্লোভ দেখে
৬
কথারা
জেগেছিলো কাল পুরোরাত
চারটের
ঘরে তখনও টিউবের আলো
কানে
হেডফোন
মুখোমুখি
দু’জন মানুষ সম্পর্কের জল বেলপাতা
নিজেদের
খুঁড়তে খুঁড়তে সেই প্রথম ভোরে
একজন
কোপাই আর একজন খোয়াই হয়ে গেলো
৭
ধরো
তার নাম সোনাঝুরি
ধরো
তার নাম ভুচুমণি
ধরো
তার নাম আদেখলানি
ধরো
তার নাম বসন্তপশারি
ধরো
তার কাছে রাখা আছে সময় ঘড়িটি
আর
ছোট ও বড়ো কাঁটাটির চুড়ান্ত নির্ঘুম
৮
জ্যোৎস্না
খুলে বসে আছো মাধব
দুঃখচর
তোমার বুকেতে
বাইরে
কলঙ্ক ঢাকছে চাঁদ কী স্ফটিক!
ভিতরে
ঘেন্না পুঁজ দগদগে ঘায়ের মাছি
কবে
ঠুকরেছিলো হৃদয়পাখিটি
জন্মমাস
ও বছর দিন ও মুহূর্তের সাইকেল
গড়াচ্ছে
গড়াচ্ছে আঠাঘন তরলের কাছে
চিটচিটে
সেইসব বছর দিন ও মুহুর্তের গায়ে
পাঁশুটে
ছাতা গজিয়েছে
ঘেন্না
পুঁজের গায়ে বড়োসড়ো কুয়োর ছলছল
৯
ঘুমের
সাথে আড়ি দিয়ে চাঁদ মামাবাড়ি গেছে
আমিও
কড়ে আঙুলের টিপে গেঁথেছি মৎস্য
আকাশের
জলবাড়ি ফাঁকা পেয়ে সে পিছল
দুদ্দাড়
ঝাঁপিয়েছে চাঁদের বদলে
পাশ
ফেরা স্বপ্নের চোখ নাকের ফুলটি সোনালিপ্রমাণ
এখনো
ফুটে আছে রাত্রিগোলকে
আর
গাছপাখি স্নানের জ্যোৎস্নায়
বেশ ভালো লাগলো।
ReplyDelete