বাক্‌ ১৪০ ।। ফারুক আফিনদী-র কবিতা





লাল ঘর

ঘামো, নেয়ে ওঠো
এমন যে
শরীর জুড়ে টসটসে ফোস্কা
ধানের পাতায় যেভাবে ফুটে থাকে শিশির

পোড়া ইটে
গড়ো লাল একটা ঘর
ঝোলাও ঝাড়বাতি
এবার নাচো
পিছে
কালো কালো লম্বা চুল
ছড়িয়ে দাও
পিঠে
লোকে দেখুক বসে
ধানখেতের আলে

লাল রৈদ- এর ভেতরে একটা ঘিআভার প্রজাপতি কিভাবে লুকিয়ে ফেললো নিজেকে! যখন হেমন্তের মায়াবি রোদের ভেতর হারিয়ে গেছে সব- ‘লোক’-

বলুক, ওই ওই, ওই-
তখন এই দৃশ্যের পেছনের মাঠে সূর্য, লাল পিঁপড়ার মতো উজ্জ্বল কণাগুলো এসে পিলপিলিয়ে ওঠে সুডৌল বুকে আমাদের উৎরে যাচ্ছে আমাদের এই আলো, আমাদের নরম মাটি ফুঁড়ে আর দৃশ্যটা একবার এভাবে ডুবে গেলো আলোর ভেতর বিমূর্ত আঁধারে

আর এক জন- বলছে আনন্দে আপন মনে- অন্ধকারের সামনেই গোল হয়ে আছে আগুনের কুণ্ডলী আর দাঁড়িয়ে শুধু...

লাল
লৌহদণ্ড
যারে দিয়েছি বিষাদের পাশে কোমল গান
দেখো দেখো, গাইছে-


মৃত্যুকে নিয়ে পড়ে থাকা কুকুর আর বুনো কচুর ফুল

সেই-  হলুদ, হলুদ- ভাদ্র
ঠাণ্ডা ছনের ঘর- আউলাঝাউলা-
বিদায়ী পানিতে হেলে থাকা ধইঞ্চা- লুপ্ত ফুল

একটা উড়ন্ত লাল কুকুর এসে একটা কুকুরনিকে নিয়ে যায়
একটা দুরন্ত কুকুর- একটা লাল কুকুরনি-

ওই খেতের কাছে- একটা লাজুক চোখ ছিল- ঠায়-
ওইদিকে যায় চলে, সারা বর্ষায় যা ভরে থাকে জলে-

কার্তিক গেলে, অগ্রহায়ণ এসে চলে গেলে---

ঘরের কানাচে
ঝরা- পাতাভরা
রাস্তায়-, ঢাল ঘেঁষে মৃত্যুকে নিয়ে
পড়ে আছে- কালো
কুকুরটা

ওপরে ধুল যায়, ভরা বাতাস, ওড়ে-

ঘরে দরজার আড়ে- হেলান দিয়ে বুনো কচু হলুদ ফুল, দীর্ঘ শিরশিরে-


                                                                                চিত্রঋণ- শোভিত রায়


3 comments:

  1. গভীর ভাবনার প্রকাশ।
    মু।

    ReplyDelete
  2. দারুন! দারুন।
    ফারুক ভাইয়ের কবিতায় সবসময় আলাদা স্বাদ পাই।

    ReplyDelete