বাক্‌ ১৪০ ।। একগুচ্ছ কবিতা ।। ইবনে শামস



আর্গন


সমস্ত কবিতা পুড়িয়ে ফেলার পর জেগে উঠছে
আলোক তরঙ্গদৈর্ঘ্য মেপে বান ডাকছে চোখের আয়ু

হাসির পাশে ঘুমাচ্ছে কান্না ভাঙিয়ো না৷ ভাংতি পয়সার
ঝনঝনানি আর ভালো লাগে না৷

দোভাষী অনুবাদ করছে পৃথিবী আর আমরা পড়ছিরঞ্জিত
জাহান্নুম থেকে পালিয়ে আসছে ইবলিশতাকে খেতে দাও
প্রেম, পাপের মতো সুস্বাদু শরীর কিংবা নাশপতি

বাস,
ট্রাক
বাচ্চাটা মাড়িয়ে গেলো
পাশে আর্গন
ট্রাফিক পুলিশ,
জন
কিংবা
নঞতৎপুরুষের দৃষ্টি

হনন করছে
বুক
দীদারে মাশুক

বাতাসে কাঁপছে
লাল মুরগের ঝুটি
ভেবে
কেটে দিবে অহম
মানুষএক হন্তারকের নাম

মৃত্যু সংবাদের
মাতম
চারদিন পরেই
মেজ্জানের শোরগোল

অনেকগুলো ধুলার আঁশ নিয়ে বসে আছি
এক মাকড়সাজাল বানাইতে পারছেনা
আধ্যানি মন ও মগজ



কীটনাশক

মৌমাছি,
মাছ,
পাখির মৃত্যুদৃশ্যের পাশে
মানুষ মৃত্যুর সম্ভাবনাকে অভিবাদন জানাচ্ছে বিষক্রিয়ায়৷



বাকওয়াসসর্বস্ব


শব্দ মূলত বাকওয়াস

মূক মুখাভিনয়ের পাশে শুয়ে থাকা মর্গ দূর্গন্ধ
রোধে হিমঘর চুরি করে আনছে ডোম ডোম
মানে সময়৷ অনন্ত হাহাকারের ভিতর ঘুমন্ত
এক হাসনুহেনা৷

দীর্ঘ মানসিক বিকারগ্রস্ততার পর হলুদ বললেই
মনে পড়ে স্কাঙ্ক ক্যাভেজের কথা ভাবি, গন্ধে
মশগুল তুতবন থেকে উঠে আসছে পঁচা লাশ৷

মানুষ মূলত পুরাটাই ফাঁপা, ভাবটুকু ছাড়া শব্দ
এক মেয়াদোত্তীর্ণ মারিজুয়ানা যা মূলত অনন্ত
শব্দহীনতার পাশে চাষ করা হয়৷



প্রতীপ রূপান্তর


যে উদ্ভিদবিজ্ঞানী কুনোব্যাঙের মুখ বিবর ছিঁড়ে হাইওয়েড যন্ত্র বের করে আনছে তার আঙুল ধরে নামছে শীতকাল হেমন্ত ফুটাচ্ছে ভেনাস হৃৎপিণ্ডেএকটা ক্ষুধার্ত মাছরাঙার দৃষ্টি আর চঞ্চুর উষ্ণতা

টেরিলোসিস বিশ্লেষণ করছে দেহ এবং পাজরের ক্ষত  সংকর জীবের পাশে বসে লাক্ষা পোকারা কেন যে জীবনের গীত গায়? 

মায়োটোমের মতোনই হা করে আছে যোনীগিলছে নতুবা নতুন কোন জন্মের আকাঙ্খায় ধ্যান করছে গিনপিগ

ক্রমশ, ক্রমশ রূপান্তর প্রক্রিয়ায় একটা মানব শুয়রের মতো হয়ে যাচ্ছে
এমন বিচ্ছিন্ন বর্ষার দিনে



মৌরুটি


ঘুমন্ত কুকুরের জিব থেকে খসে পড়ছে শান্তির পয়গাম সিনইকোলজি ও অটইকোলজির পার্থক্য ঘাঁটতে ঘাঁটতে একটা পুরো বন পুড়ে খাক হয়ে গেছে৷ দুঃখ হয় কী? পশুদের পশমপোড়া গন্ধ থেকে তৈরী হচ্ছে মেশকে আম্বর

কিতাবে মুখ গুজে কাঁদছে জাহান; তুমি মুখস্ত করছো 'প্রাণী হত্যা মহাপাপ' অস্ত্র ও রেলওয়ে কারখানায় কিংবা বৈদ্যুতিক শিল্পে কার জীবন ছিঁড়ে আনছে বার্নিশের উপাদান?

রজনযৌনতা খুলে দিচ্ছে পোকাদের; দোকানদারের আতরে আগ্রহ



বায়ুথলি


কবুতর উড়ে যাওয়ার দৃশ্য থেকে মুখস্ত করি উড়োজাহাজের ভানমানব কতোটুকু আগাইলো ভাবতে গিয়ে দেখি ছিঁড়ে গেছে বায়ুথলি

অনুনাদের অপেক্ষারত হৃদয়ের কি হবে এখন? আরো একটা দীর্ঘ শীতকাল গত হবে ফুলকপির পত্রবিন্যাস ধরে মজুত বাতাস এখন কোথায়, কার বিয়োগে মিশে হয়েছে কান্না?

যান্ত্রিক ঘর্ষণের আদিখ্যেতায় ভোর কাঁচা টমেটোর মতো পাকার ধ্যানে মশগুলচিঠিতে লিখেছো 'একটি হাপর ধার দিয়ো'


ধিক্কার


লাল বাতির মতো জ্বলতেছে ধিক্কার
ধীবর, ধীবর আমরে দাও কিছু গতি

অনিন্দ্যতম ধিক্কারের পাশে শুয়ে থাকা হে কুৎসিত ফুল
পাঁপড়িতে রেখোনা পাঁজরের গন্ধকবুতরের
দুধ চুরি করতে এসেছে যে পাখির ছানা তার
পরিচয় লিখে রেখেছে চোখের তিল

সন্ধ্যা ঘনাচ্ছে
ঘনাচ্ছে তাবৎ দুনিয়ার তমাশা

রঙিন ফুসফুস জোড়া মেসোপোটেমিয়া যুগের বিষণ্ণতা
টানতেছে গাধার মতো জীবনে ঘানি



গ্রীবাতে ডুবেছে যে অন্ধকার


"অনভিপ্রেত চাপাকান্নার পাশাপাশি শুয়ে মশকো করিতেছি নিগুঢ়ে শিয়ালের শব্দসংকেত

বহুবিধ বাহুবিজ্ঞানে দাঁড়িয়ে থাকা বৃক্ষমূল ধরে টানিতেছে
শয়তান; ঝরিতেছে নক্ষত্রলিপি চাঁদের মর্মরেধ্যানিতেছে
মোহবিদ্যার যতো চিহ্ন

দিয়েছো যতো কান্নাততো হিরে পান্নাহৃদিতে মরিতেছে
হায়পুষ্পের যতো কৃপা।”



                                                  চিত্রঋণ- শোভিত রায়

1 comment: