বাক্‌ ১৪০ ।। ঢাকা রোডের পর্ণোগ্রাফি ।। অনির্বাণ সূর্যকান্ত



ঢাকা রোডের পর্ণোগ্রাফি

তালিকা বাড়তে থাকে আমাদের। বকেয়ার খাতা ভারী হয়, এই খাতা পৃথিবীকে খেয়ে ফেলে, একদিন পৃথিবী যখন ঘুরবে না, চাঁদও আলো দেবে না। কোনো স্তনেও থাকবে না বারুদ সেদিন সব সুন্দরী রাজনৈতিক পথ বিসর্জন দেবে ছদ্মনাম। 
১৭.১১.১৪২৬

তোমার ব্লাউজের ভেতর ডুবে যাচ্ছে কীর্তনখোলার ছদ্মনাম। ব্লাউজ এক অন্যমনস্ক ইউরেনিয়াম
১৭.১১.১৪২৬

বসন্তের সময় কম, বরফগুলো চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে, গোলাপগুলো কাঁদছে। ঋণ করছে অস্বচ্ছ পাণ্ডুলিপি।  মুদ্রাদোষের কথা বলছে পরকীয়া কবিতা ঠোঙা।
যুগে যুগে নগ্ন হয়েছি পত্রপাঠে, সাম্প্রদায়িক দাঙায় ঠিকানা হারায় না। মিথ্যে মিথ্যে হাড্ডির ভেতর রেকাব জ্বলে। 
১৭.১১.১৪২৬

সুখী আয়না বিক্রি যারা করে তাদের সংসারের ঝুলানো আয়নাতে ভয়,
তারা রুমাল ব্যবহার করে না
তারা পাটিগণিত জানে না
তারা বীজগণিতের ব্যবহারেও কাঁচা
তাদের ওসুধের পাতায় দৌড় আর আলোর চিৎকার থাকে
তারা যথা তথায় থমথমে শোয়, তারা আঘাত খায়, তাদের আয়নায় প্রশ্ন জমা পড়ে,  তাদের হৃদয়ে গুজব, সাম্প্রদায়িকতা হাসি সহ্য হয় না।
ক্ষুধা এক আঘাত টসটস করে কাঁদে। ক্ষুধা যদি ভাঁজ করা যেতো তবে পাউডার মেখে ভাঁজ করে সুখী আয়না বিক্রেতা আয়নাতে রাখতো।
১৯.১১.১৪২৬

গভীর রাত পর্যন্ত অফিস করি, মেয়েটা আমার অপেক্ষা করে, কোমলভাবে রুমাল এগিয়ে দেবে বলে জেগে থাকে। রুমাল দিয়ে মুখ মোছার সময় মনে হয় মেয়েটাই শুষে নিচ্ছে আমার ভাঙা দেয়ালগুলো। দেয়ালে মাংস নেই, বন্দুকও নেই।
বাবা বিরক্ত হও? বাবা টেলিফোন বাজে কেন? টেলিফোন কী জানে জ্বরফুলের বিশ্বাস?  বাবা হিংসা কি আলো? অন্ধকার?
আমার মেয়ে প্রশ্ন করতে থাকে, বাবা,  আঘাত দিতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হলেই বাড়িঘর পুড়ে, অন্ধকার নামে, সূর্য দস্তানায় লুকিয়ে পড়ে, এ্যাম্বুলেন্স আসে, চিৎকার করে জানান দেয় এ্যাম্বুলেন্স এক পোড় খাওয়া রুটি। চামড়ার নিচে পুড়ে যাওয়া পাখি।
১৩.১১.১৪২৬

সকাল বেলায় একা হয়ে পড়েছি, খোঁপা বাঁধতে পারি না, মাফলারের ভেতর উষ্ণতা বেদবাক্যের মতো আস্তিক।পার্কে পার্কে সাদা শাড়িগুলো প্রসব বেদনায় ছটফট করে। সুন্দর মুহুর্ত বৌদিদের মতো একা। আমাদের ডাকনাম বিড়ালের কাছ থেকে নেয়া। ঠোঁটে জড়ানো মদের গন্ধ আর আচরের দাগ নিয়ে গোপীদের রিহার্সাল রুমগুলোতে আপেল পড়ার শব্দ হয়। পাত্রপক্ষকে কাটা মাথা উপহার দেয়া হবে। চিৎকার করতে করতে প্রেমিকা আমার চূড়ান্ত পাণ্ডুলিপি হয়ে গেলো। তার ভেতরে ধোঁয়া, তার ভেতরে যৌনকাতর ডিটেকটিভ আয়না।
মাথায় শয়তানি ভর করছে, মাইন্ড করার কিছু নেই স্তন দুটি শ্রমিক জন্ম নিয়েছে। অনামিকা আঙুল পুরুষ নাকি নারী তা নিয়ে কেউ বেইট আজতক ধরেনি।
১০.১১.১৪২৬

রিকসাঅলাকে চড় মারলে বিচারক বদলি হয় না
পুলিশকে চড় মেরে দেখো পেছনের মাংস তুলে নেবে
তার উপরেতো চড় মারার কথা ভাবাই যায় না, এখানে মৃত্যু বিষয়ে লেখে যাওয়ার দরকার নেই, সবাই সন্দেহ করবে, নিরাপদ দুরত্ব কে না চায়?
ধর্ম থেকে দুরত্ব
রাজনীতি থেকে দুরত্ব
ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো থেকে দুরত্ব
কার কি মতলব আছে তার থেকে দুরত্ব
গোটা ভারতবর্ষ আজ দূরত্বে আছে, এক মহান ট্রাজেডি নিয়ে দূরত্বপুরাণ হচ্ছে। সকাল থেকে বিকালের দূরত্ব, জন্ম থেকে মৃত্যুর দূরত্ব, মা থেকে হিংসার দূরত্ব, ফুল থেকে কন্ডমের দূরত্ব বেশি না
কিন্তু ঠিক ঠিক মানুষ আল্লাহু আকবর থেকে জয় শ্রী রামের দূরত্ব বের করে ফেললো।
২০.১১.১৪২৬

রোদ উঠেছে, কবি ফোন করেই চলে গেছে দেবী বিসর্জনে পাখির সেজদা রেকর্ড করতে।
নারী নিয়ে কথা হচ্ছে নুনের স্বাদে, যমজ জন্মের পরের দিনই বোবা হয়ে গেছে কোর্ট বুকে আঁকা টিউমার।
নারী এক সম্মোহনী গ্রাম, ফাৎনা দুলছে, বাংলা হরফে ন্যাংটো হয়ে গেলো ভাড়া বাড়ি।
সাতই জানুয়ারীতে জন্ম নিয়েই নেগেটিভ মার্কিং শুরু। আবার চাই কিন্তু সরু গলিতে শ্রেষ্ঠ কবিতা বাটা সংযত করে রাখতে চাই। কেউ চুমু খেলে ছ্যাকা লাগে, খাদ্য নালী জুড়ে পালিয়ে বেড়ায় উপযুক্ত মেয়ে।
২৪.০৯.১৪২৬


মাংসের উপযোগিতায় ১৪৪ ধারা অমান্য করলে গুলি চালানো হয়। ছেলেরা ফুলের মতো কেউ বলে না, মেয়েরা মাস্টারবেশন করে কেউ বলে না।  বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাগলের বাম্পার ফলন হচ্ছে কেউ বলে না। প্রধান নির্বাহীরা ঘোড়া রোগে ভুগে কেউ বলে না কিন্তু আদপে শীতকাল চলে গেলে জনোনেন্দ্রীয় নিয়ে কেউ নাবালক পিতার তিন সন্তান হারকিউলিস, আর দূর্ঘটনায় লেখে গেছে ক্যামেরা চাষ।
রাত বাড়তে থাকলে ছাদঘরের  উষ্ণতা কমে যায়, মগডালে পুরুষের দেহ স্ফীত হয়,ঈষৎ ভঙ্গুরতা নিয়ে ব্রেসিয়ারের নিচে ঝিমায় আচরকাটা ওঁমের বীজ। আগুন বাড়ে, চুলায় অপেক্ষা করে সম্মোহনী রাজনীতির ক্যাটারিং। 
০৩.১০.১৪২৬



                                                                      চিত্রঋণ- ভোর মুখোপাধ্যায়

4 comments:

  1. খুব ভালো কবিতা।
    এইসময়কে চিহ্নিত করে এই কাব্যিক বয়ান।
    ভালোবাসা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভালোবাসা স্বততঃ দা

      Delete
  2. সমসাময়িক। কিছু শব্দের ব্যবহার ভালো লাগলো।

    ReplyDelete